জিয়া সাইবার ফোর্স: সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং কার্যক্রম

২০১৫ সালের ৫ মার্চ, ফাইজাল খানের নেতৃত্বে “We Revolt” নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে জিয়া সাইবার ফোর্সের (ZCF) যাত্রা শুরু হয়। এটি মূলত জাতীয়তাবাদী আদর্শ প্রচার এবং সাইবার স্পেসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠে। ১৮ মার্চ গ্রুপটির নাম পরিবর্তন করে “জিয়া সাইবার ফোর্স” রাখা হয়। শুরুর দিনগুলোতে সংগঠনটি সরকারের সমালোচনা এবং জাতীয় ইস্যুতে সচেতনতা তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। মিডিয়া প্রচারের জন্য “জিয়া সাইবার ফোর্স মিডিয়া সেল” নামে একটি পেজ চালু করা হয়, যা দলের আদর্শকে প্রচারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
প্রথম বর্ষপূর্তি ও সেমিনার: ২০১৬ সালের ৫ মার্চ, জিয়া সাইবার ফোর্স তাদের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে একটি সেমিনার আয়োজন করে। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যিনি ZCF এর কার্যক্রমকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেন। এই সেমিনারে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দলের সদস্যদের অনুপ্রাণিত করে বলেন, “তোমরাই আমাদের মিডিয়া,” যা সংগঠনের জন্য একটি বিশাল অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়।
সংগঠনের সংকট ও পুনরুদ্ধার: ২০১৭ সালে সংগঠনটি প্রথম বড় সংকটের মুখোমুখি হয়, যখন মুজিবুর রহমান মঞ্জু নামক একজন হ্যাকার ZCF এর ফেসবুক গ্রুপটি হ্যাক করে এবং এর মাধ্যমে সংগঠনের নাম খারাপ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। তবে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করেন এবং নতুন উদ্যমে কার্যক্রম শুরু করেন।
সাইবার নিপীড়ন ও সংগ্রাম: ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় ZCF এর বেশ কয়েকজন সদস্য সাইবার সিকিউরিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলার শিকার হন। সরকারি দমন-পীড়নের কারণে অনেক সদস্য গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান। তবে সংগঠনটি সাইবার স্পেসে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ফ্রন্ট হিসেবে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।
সামাজিক ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণ: বর্তমানে জিয়া সাইবার ফোর্স জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে চলেছে। তাদের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে সভা-সেমিনার আয়োজন, ফ্যাক্ট চেকিং, অনলাইন ক্যাম্পেইন, এবং সাইবার স্পেসে সরকারবিরোধী প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে লড়াই। এছাড়াও, বিভিন্ন মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে ZCF, যেমন ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ বিতরণ।

সংগঠনের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য: জিয়া সাইবার ফোর্স ভবিষ্যতে দেশের নতুন প্রজন্মকে জাতীয়তাবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি, তারা সাইবার সিকিউরিটি ও ফ্যাক্ট চেকিং কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। সংগঠনটি সাইবার স্পেসে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতির প্রচার এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।